ড্রিম হলিডে পার্ক সাপ্তাহিক বন্ধের দিন | যাওয়ার উপায় | টিকিট ফি 

যারা নরসিংদী আছেন তাদের পরিবার কিংবা প্রিয় মানুষের সাথে ভালো সময় কাটানোর পার্ফেক্ট অপশন হলো এই ড্রিম হলিডে পার্ক। এই পার্কটি থেকে ঘুরে আসতে চলুন সংক্ষিপ্ত আকারে জেনে নিই ড্রিম হলিডে পার্ক পরিচিতি, ড্রিম হলিডে পার্ক সাপ্তাহিক বন্ধের দিন, ড্রিম হলিডে পার্ক টিকিট ফি এবং লোকেশনসহ অন্যান্য তথ্য। সুতরাং সাথেই থাকুন। 

ড্রিম হলিডে পার্ক পরিচিতি

ড্রিম হলিডে পার্ক হলো নরসিংদীর চমৎকার দর্শনীয় স্থানগুলির একটি। যা তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়েছে প্রায় ৬০ একরের মতো জায়গা। সুতরাং বুঝতেই পারছেন ড্রিম হলিডে পার্ককে কত বিশাল পরিমাণ এলাকা জুড়ে সাজানো হয়েছে! 

একটি পার্কে মূলত যত ধরণের রাইডার কিংবা জিনিসপত্রের প্রয়োজন পড়ে প্রায় সবকিছু দিয়েই সাজানো হয়েছে এই ড্রিম হলিডে পার্ক। ২০১১ সালে তৈরি করা এই ড্রিম হলিডে পার্কে এখনো পর্যন্ত রয়েছে সর্বমোট ৩০ টি রাইড ব্যবহারের সুযোগ। কতৃপক্ষের ভাস্য অনুযায়ী ভবিষ্যতে এই রাইডের সংখ্যা আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। 

ড্রিম হলিডে পার্কের রাইড এবং অন্যান্য আকর্ষণ 

যারা বিভিন্ন রাইড ব্যবহার করে কিছু আনন্দঘন সময় উপভোগ করতে চান তারা ড্রিম হলিডে পার্কের বিভিন্ন রাইড ব্যবহার করতে পারেন। এসব রাইড ছোট থেকে বড় সকলেই ব্যবহার করতে পারবে। ড্রিম হলিডে পার্কে ৩০ টি রাইডের চমৎকার কিছু অপশন হলো: 

  • বাই সাইকেল
  • নাগেট ক্যাসেল
  • কাইট ফ্লাইং
  • সুইং চেয়ার
  • ৯ডি মুভি
  • ওয়াটার কার
  • মটর বাইক
  • স্পিড বোট
  • প্যাডেল কোস্টার
  • বুল রাইড
  • বুলেট ট্রেন
  • রকিং হর্স
  • হংসরাজ প্যাডেল
  • জেট ফাইটার বোট
  • ঘোস্ট হাউজ
  • ক্যাবেল কার
  • বাম্পার কার ও অন্যান্য

আমরা কেবলমাত্র জনপ্রিয় এবং বাজেট ফ্রেন্ডলি ড্রিম হলিডে পার্কের বেশকিছু রাইডের কথা বললাম। উপরোক্ত রাইডগুলি ছাড়াও পার্কটিতে আরো অনেক রাইড ব্যবহার করে কিছু আনন্দঘন সময় পার করার অপশন রয়েছে। 

এবার আসি এসব রাইডে চড়তে কোনো টাকা খরচ করতে হবে কিনা সে ব্যাপারে! হ্যাঁ! ড্রিম হলিডে পার্কের প্রতিটি রাইডই আপনাকে ব্যবহার করতে হবে টাকা দিয়ে। এক্ষেত্রে কতৃপক্ষ প্রতিটি রাইডের মুল্য প্রায় ৫৫-১১০ টাকার মতো ধার্য্য করেছে। 

তবে হ্যাঁ! মাঝেমধ্যে পার্ক কতৃপক্ষ এসব রাইডের উপর বিভিন্ন অফারের ব্যবস্থা করে থাকে। যেমন পার্কের অংশ ওয়াটার পার্ক ও সাফারি পার্কের ভেতর থেকে যারা একসাথে ২০ টি রাইড উপভোগ করতে চান তাদের অফারমূল্য ২,৫০০ টাকা দিলেই হবে। 

তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই দর্শনার্থীকে কাপল হতে হবে। বলে রাখা ভালো এই ২,৫০০ টাকার সাথে কিন্তু অলরেডি ভ্যাট যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং আপনাকে আর আলাদা করে ভ্যাট দিতে হবে না। 

আর যদি জানতে চান ড্রিম হলিডে পার্কের অন্যান্য স্থাপনা বা আকর্ষণ সম্পর্কে সেক্ষেত্রে বলবো এখানে রয়েছে মায়াবি স্পট, কৃত্রিম অভয়ারণ্য, ডুপ্লেক্স কটেজ, সুবিশাল লেক, মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশবেষ্টিত নয়নাভিরাম ক্যানেলসহ আরো অনেক সুন্দর সুন্দর স্থান। 

যারা অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ইমু পাখি দেখতে চান তারা এখানকার মিনি চিড়িয়াখানা থেকে ঘুরে যেতে পারেন। 

ড্রিম হলিডে পার্কের বিশাল পিকনিক স্পট

শুধু কি তাই? ড্রিম হলিডে পার্কের অংশ হিসাবে স্থানটিতে এর পাশাপাশি পেয়ে যাচ্ছেন ১০০ – ১০০০ জনের একটি চমৎকার পিকনিক স্পট। যারা পিকনিক করতে চান তাও পার্কটিতে গিয়ে তারা ড্রিম হলিডে পার্কের এই বিশাল পিকনিক স্পটটি ব্যবহার করতে পারেন। 

এছাড়াও পারিবারিক পিকনিক, ফ্রেন্ডদের নিয়ে পিকনিক এবং অফিস ট্যুর যেকোনো টাইপের পিকনিক আয়োজনের অপশন রাখা হয়েছে এই পিকনিকটিতে। আর যারা এই পিকনিক স্পটটি ব্যবহার করতে চান তাদের গুনতে হবে ৫০,০০০ থেকে ৩,৪৫,০০০ টাকার মতো। 

তবে এক্ষেত্রে পিকনিকের সদস্য সংখ্যা কমপক্ষে ১০০ এবং সর্বোচ্চ হতে হবে ১০০০ এর মতো। তাছাড়া পিকনিক চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন সুবিধা ও পিকনিক স্পট এবং আপনারা কতজন যাবেন তার উপর নির্ভর করে এই ভাড়ার প্রাইজ আরো কমিয়ে আনা যাবে। এক্ষেত্রে কথা বলতে হবে কতৃপক্ষের সাথে। 

যারা ড্রিম হলিডে পার্কের এই পিকনিক স্পটটি ব্যবহার করতে চান কিংবা ভাড়া নিতে চান তারা পার্ক কতৃপক্ষের সাথে এই ব্যাপারে সরাসরি কথা বলে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে কল করুন 01762-696302, 01762-696303, 01762-696304, 01762-696305 বা 01762-696306 এই নাম্বারে। 

ড্রিম হলিডে পার্ক সাপ্তাহিক বন্ধের দিন

কোনো পার্কই কিন্তু সপ্তাহের ৭ দিনই বা মাসের ৩০ দিনই খোলা থাকে না। তবে একই নিয়ম প্রযোজ্য নয় ড্রিম হলিডে পার্কের ক্ষেত্রে। আসুন তবে আর্টিকেলের এই অংশে জানি ড্রিম হলিডে পার্ক সাপ্তাহিক বন্ধের দিন কখন সে-সম্পর্কে। 

মূলত ড্রিম হলিডে পার্কের কোনো সাপ্তাহিক বন্ধের দিন নেই। সপ্তাহের ৭ দিনই এটি দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। তবে সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৬ টা ৩০ মি. এর পর ধীরে ধীরে পার্কটি বন্ধ করবার প্ল্যান চলে। এক্ষেত্রে এই সময়টাতে বন্ধ করে দেওয়া হয় টিকিট বিক্রির কার্যক্রম। 

আর যারা ড্রিম হলিডে পার্ক কখন খোলা থাকে বা দিনের কত সময় পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকে তা জানতে চান তারা বলে রাখা ভালো পার্কটি সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকে। সেই সাথে উন্মুক্ত থাকে মায়াবি স্পট, কৃত্রিম অভয়ারণ্য, ডুপ্লেক্স কটেজ, সুবিশাল লেকসহ মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশবেষ্টিত নয়নাভিরাম ক্যানেল। 

ড্রিম হলিডে পার্কে যাওয়ার উপায়

এবার আসি ড্রিম হলিডে পার্কে যাওয়ার উপায় সম্পর্কে। 

মূলত যারা বাস ব্যবহার করে পার্টটিতে যেতে চান তারা ঢাকার কমলাপুর, মহাখালী ও সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে নরসিংদীমুখি যেকোনো একটি বাসে উঠে পড়তে পারেন। প্রথমবার যদি বাস ধরতে নাও পারেন সেক্ষেত্রে চিন্তার কোনো কারণ নেই। 

কারণ ৩০ মিনিট পরপরই এখানে নরসিংদীমুখি বাস পাওয়া যায়। যারা কমলাপুর, মহাখালী ও সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে বাস নিতে পারবেন না তারা ঢাকা-সিলেট বিভাগের বাস লাইন থেকেও যেকোনো একটি বাস নিতে পারেন। তাছাড়া কাঁচপুর অথবা টঙ্গী থেকে কালীগঞ্জ, ঘোড়াশাল হয়েও যাওয়া যাবে নরসিংদীর এই চমৎকার দর্শনীয় স্থানটিতে। 

আর যারা পার্কটিতে ট্রেনে করে যেতে চান তাদের জন্য রয়েছে এগারোসিন্দুর ও মহানগর গোধূলী ট্রেন অপশন। এসব ট্রেন ছাড়াও ব্যবহার করতে পারেন ঢাকা-চট্টগ্রামের যেকোনো লোকাল ট্রেন। এসব ট্রেনে করে সরাসরি চলে যাবেন নরসিংদী স্টেশন অথবা ঘোড়াশাল স্টেশনে। সেখান থেকে নেবেন ড্রিম হলিডে পার্কমুখি বাস। বাস আপনাকে সরাসরি ড্রিম হলিডে পার্কে নিয়ে যাবে। 

ড্রিম হলিডে পার্কে গিয়ে কি খাবেন? 

ট্যুরে গেলেন! অথচ সেখানকার কোনো ফেমাস খাবার ট্রাই করলেন না তা কি হয়? অবশ্যই না! তবে চলুন জেনে নিই ড্রিম হলিডে পার্কে গিয়ে কি খাবেন সে সম্পর্কে। 

মূলত ড্রিম হলিডে পার্কে গিয়ে খাবার হিসাবে সেখানকার বিখ্যাত ফুচকা কোনোভাবেই মিস করা যাবে না। এই পার্কে খাবার হিসাবে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো এখানকার ফুচকা। পাশাপাশি এই পার্কের আইসক্রিমও বেশ স্পেশাল। পাশাপাশি পাবেন চটপটসহ বিভিন্ন টাইপের চা নাস্তা। 

আর যারা লাঞ্চ বা ডিনারের মতো ভারি খাবার খুঁজছেন তারা এখানকার বাংলা কিংবা চাইনিজ যেকোনো খাবারই ট্রাই করতে পারেন। তবে এখানকার চাইনিজ খাবারের স্বাদ অতুলনীয়। 

আর এতোসব খাবার পেতে আপনাকে এখানে-সেখানে দৌড়াদৌড়ি করতে হবে না। কারণ কেবল একটি রেস্টুরেন্টই আছে ড্রিম হলিডে পার্কটিতে এবং সেখানেই পেয়ে যাবেন এতোসব চমৎকার খাবারদাবার। 

আর হ্যাঁ….যারা ঘরের বিভিন্ন জিনিসপত্র যেমন ব্যাড সিট, ঘর সাজানোর জিনিস ইত্যাদি পছন্দ করেন তারা এখান থেকে কিনে নিতে পারেন। পাশাপাশি এখানে ভালো জামদানির কালেকশনও পাওয়া যায়। আশা করি ভালো লাগবে। 

ড্রিম হলিডে পার্কের টিকিট ফি

সবশেষে চলুন জেনে নিই ড্রিম হলিডে পার্কের টিকিট ফি সম্পর্কে। মূলত একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যাক্তির টিকিটের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৩২০ টাকা ভ্যাট ছাড়া। অন্যদিকে ভ্যাট ছাড়াই শিশু ক্যাটাগরির দর্শনার্থীদের টিকিটের মূল্য একজন ২২০ টাকা করে। 

Leave a Comment